Tuesday, February 22, 2011

এস-এ পরিবহন সহ অন্যান্য কুরিয়ার সার্ভিসের মানি ট্রান্জেকশান সুবিধা প্রসন্গে...

 এস-এ পরিবহন সহ অন্যান্য কুরিয়ার সার্ভিসের মানি ট্রান্জেকশান সুবিধা প্রসন্গে...

এস-এ পরিবহন দেশের বৃহৎ একটা কুরিয়ার সার্ভিস সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। এই সংস্হার আদ্যপান্ত জানা বা তাগো ইতিহাস নিয়া টানাটানি করার কোন ইচ্ছা আমার নাই। আমার আগ্রহ শুধুমাত্র এই কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের মানি ট্রান্সফার সার্ভিসটা নিয়া।

কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ী এস-এ পরিবহন অফিসে একটা প্যাকেজ সংগ্রহের জন্য দীর্ঘক্ষন একটা ভুল কিউতে দাড়ানো আছিলাম। দাড়ানোর এক পর্যায়ে হঠাৎ বুঝতে পারলাম এইখান থাইকা সকলে টাকা কালেক্ট করে। আমার কাউন্টার এইটা না। দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়াইয়া মুটামুটি ভাবে বিশ্মিত হইলাম উক্ত কাউন্টারের কার্যক্রম দেইখা। কুরিয়ার সার্ভিস তো নয়, যেন এক ব্যাংকিং সার্ভিস খুইলা বসছে। চারিদিকে টাকার ছড়াছড়ি। এই দিতাছে, এই নিতাছে। ফোন করো, ফোন ধরো, টাকা দেও, টাকা নেও....বিশাল হুলুস্হুল ব্যাপার।


প্রথমে একটু প্যা কেজ সার্ভিসের সিস্টেম নিয়া আলাপ করি। এস-এ পরিবহনে যে কোন প্যাকেজ পাঠাইলে সেইটাতে প্রাপকের সম্পূর্ন ঠিকানা না দিলেও চলে। শুধুমাত্র প্রাপকের নাম, এস-এ পরিবহন অফিসের এরিয়া আর মোবাইল নাম্বার দিলেই যথেষ্ট।


এতেই এস-এ পরিবহনে মাধ্যমে আমার কাছে কুরিয়ারটা পৌছে যাবে। সিলেটের এস-এ পরিবহন থাইকা আমারে ফোন দিয়া কইবো আমার একটা কুরিয়ার আছে কালেক্ট করার জন্য। আমি তাগো অফিসে গেলে তারা আমারে তাগো একটা মোবাইলে ফোন করতে কইবো আমার মোবাইল নাম্বার চেক করার জন্য। এতেই হইবো। আমার মোবাইল নাম্বার অন্য কারো কাছে থাকলেই হইবো। এইখানে আইডি হইলো মোবাইল নাম্বার। আমি সামী গেলাম না রহিম গেলাম না করিম গেলাম এইটার কোন আইডিন্টিফিকেশান চ্যাকিং নাই। কি বিচিত্র সিস্টেম!!!


যাই হউক, এইবার আসি মানি ট্রান্সফারের কথায়। টাকা আদানপ্রদানের ক্ষেত্রেও একই অবস্হা। হাজার টাকা, লক্ষ টাকা যাই হউক প্রাকের নাম আর ফোন নাম্বার হইলেই চলে। অন্য কোন পরিচয়পত্র বা ডকুমেন্টেরও প্রয়োজন হয়না। শুধু নাম আর ফোন নাম্বার চেক কইরাই প্রাপককে টাকা দিয়া দেয়া হয়। মাঝে কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্টানটি হাজারে ৮ টাকা দরে একটা সার্ভিস চার্জ দাবী করে। হাজার হোক, লক্ষ হউক কোন বাচবিচার নাই। মাঝে প্রাপক কে ছিনতাই কইরা যদি তার মোবাইল নিয়া ছিনতাইকারী কুরিয়ার সার্ভিস অফিসে গিয়া বলে সে টাকার দাবীদার তবে মোবাইল নাম্বার চ্যাক কইরা, প্রেরককে একটা ফোন কইরা শিউর হইয়া ছিনতাইকারীরেই টাকাটা দেয়া হবে বইলাই গণ্য হয়। প্রাপক কে, কার কাছ থাইকা কিভাবে কেন টাকা নিতেছে এইটার কোন ফার্দার তদন্তের কোন সিস্টেম এইখানে নাই। কোন সাক্ষী নাই, প্রমান নাই, প্রপার কোন ডকুমেন্ট নাই অথচ লক্ষ টাকা আদান-প্রদান হইয়া গেল, আমাগো বিচিত্র এই দেশেই এইটা সম্ভব। আর কোথাও না। আর এইটাই সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি। থু: .............


সরকার এইখানে বিরাট রেগুলেশান করতে পারে। অন্তত সরকার একটা নীতিমালা নির্ধারন কইরা দিতে পারে। সরকার কুরিয়া সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলা আদান-প্রদান মনিটরিং করতে পারে। তাগো ডেটা কালেক্ট করতে পারে। কিন্তু সরকার থাইকাও কোন রেগুলেশান নাই, নীতিমালা নাই, মনিটরিং নাই।


সরকার টাকা'র এমাউন্টে কোন ম্যাক্সিমাম ভ্যালু নির্ধারন কইরা দিতে পারে। ৫০০০, ১০০০০ বা ৫০০০০ যাই হউক এর বেশী টাকা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো বা গ্রহন করা যাইবোনা। টাকা পাঠানোর সময় কুরিয়ার সার্ভিস সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলা প্রেরকের আইডি কার্ড অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি রাখতে পারে, ছবি তুইলাও রাখতে পারে। প্রেরিত স্হান থাইকা টাকা তুলার সময় প্রাপকের আইডি অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি এবং সাথে ছবি তুইলাও রাখতে পারে। কেউ কি সিস্টেমটার মিসইউজ করতেছে কিনা, কেউ কি কাউরে ব্ল্যাকমেইল করতেছে কিনা, কেউ কাউরে কিডন্যাপ কইরা মুক্তিপন আদায় করতেছে কিনা, কেউ অবৈধ টাকা এক জায়গা থাইকা আরেক জায়গায় পাচার করতেছে কিনা এইসব পরবর্তীতে জানার জন্য এইসব আইডি ফটোকপি বা ছবি রাখা খুবই জরুরী। ফার্দার তদন্ত কামে এইটা বিরাট সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।


কিন্তু আমাগো আবাল এই দ্যাশে এইসব কিছুই হয়না। কি এক বাল-ছাল মোবাইল নাম্বার আর নাম হইলেই টাকা তোলা যায়। ভুয়া মোবাইল নাম্বার, ভুয়া নাম হইলেও কোন সমস্যা নাই। প্রাপক টাকাটা কেন নিতেছে, কারো মুক্তিপন আদায়ের যের হিসাবে তার মায়ের অপারেশানের জন্য না সিনেমার কোন নায়িকার সাথে রতিক্রিয়া করার জন্য তা জানার কোন ফার্দার প্রসেস এই সিস্টেমে নাই। প্রাপক টাকাটা নেয়ার পর যদি মোবাইলের সিমটা বন্ধ কইরা দেয় বা সিমটা যদি ভুয়া নাম ঠিকানার হয় তবে তারে ট্রেস করার আর কোন পদ্ধতি এইখানে নাই। ন্যাশনাল আইডি অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি থাকলে অথবা টাকা নেওনের সময় ছবি তুইলা রাখলে পরে কোন তদন্তের স্বার্থে তা কামে লাগতে পারে। কিন্তু এইরম হইবার কোন সিস্টেম নাই। কারন সরকার থাইকা কোন নীতিমালা নাই, কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলার কোন গরজ নাই। সকল গরজ এই ভুক্তভোগী আবালস্য আবাল জনগনের।


ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা আদানপ্রদান করলে একাউন্টের জের ধরে তার পেছনের মানুষটার কাছে পৌছানো যায়। এটা খুবই স্বাভাবিক এবং সম্ভব। কিন্তু শুধু একটি নাম এবং মোবাইল নাম্বারের জের ধরে কাউকে ট্রেস করা মরার এই দেশে খড়ের গাদায় সুচ খোজা নয়, রীতিমতো অসম্ভব। টাকা ট্রান্সফার হউক, সহজ উপায়েই হউক, কিন্তু মিনিমাম কিছু পরিচয় সূত্র রেখেই তা হউক। যেন পদ্ধতির মিসইউজ না হয়। যেন মিসইউজ হলে পেছনের ব্যক্তিগুলোকে সহজেই খুজে বের করা যায়। কেউ কাউকে ভয় দেখিয়ে, বা ঠগবাজী করে, বা কাউকে জিন্মি করে কেউ যেন অল্প সময়ে খুব সহজেই এস-এ পরিবহন বা অন্য কোন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতে পারেনা। টাকা হাতিয়ে নিলেও যেন পরবর্তীতে তার কাছে পৌছানো যায় অন্তত তার মুখে একবার হলেও একদলা থুতু নিক্ষেপের জন্য। মোবাইল নাম্বার এবং নাম কোন মানুষের পরিচয় হতে পারেনা। এসব খুবই সহজলভ্য। ১০০ টাকা হলেই একটি সিম পাওয়া যায়। নামের জন্য তো ১ পয়সাও খরচ করতে হয় না। ন্যাশনাল আইডি, পাসপোর্টের ফটোকপি এবং ছবি তুলে রেখেই টাকা আদান-প্রদান সেবা দান করাই আমাদের কাম্য।


আমার এই লেখা সরকারের কেউ পড়বোনা বইলাই বোধ হয়। কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলার কেউও পড়বো কিনা সন্দেহ। পড়লেও তারা এইটা নিয়া কোন মাথা ঘামাইবোনা। আমার পিন্ডি চটকাইতে চাইবো। কারন মনিটরিং বসাইলেই তাগো ব্যাবসাতে ডাউনফ্লো শুরু হইবো। টাকায় ম্যাক্সিমাম এমাউন্ট নির্ধারন করলে তাগো ক্যাশ ইনফ্লো কইমা যাইবো। এই লেখাটা পড়বো আমার মতোই আবালস্য আবাল কিছু জনগন যারা ব্লগার নামে পরিচিত। আমি তাগোর কাছেই বিষয়টা তুইলা ধরলাম এই আশায় যে হয়তো এইখানকার কেউ ব্যাপারটা নিয়া ফার্দার আলোচনা করবেন এবং এক পর্যায়ে তা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করবে। 

No comments:

Post a Comment