Sunday, June 26, 2011

সেবার নামে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ছে কুরিয়ার সার্ভিসে

সেবার নামে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ছে কুরিয়ার সার্ভিসে* নথি ও মালামাল হারিয়ে যাচ্ছে
* ঠিক সময়ে পৌঁছায় না ডাক
* ক্ষতিপূরণ পান না গ্রাহকরা
শেখ শাফায়াত হোসেন ডাকবিভাগের ধীরগতি ও ভোগান্তির ফলে মানুষ নির্ভরশীল হচ্ছে বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের ওপর। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চিঠি ও জিনিসপত্রের পাশাপাশি টাকাও পাঠানো হচ্ছে এই সেবা খাতের মাধ্যমে। প্রায় তিন যুগ আগে চালু হওয়া এ সেবা খাতে কম্পানির সংখ্যার সঙ্গে বেড়েছে বিনিয়োগও; কিন্তু নির্ভরশীলতা বাড়ার উল্টোপথে কমতে থাকছে সেবার মান। গ্রাহক ভোগান্তি বেড়েই চলছে কুরিয়ার সার্ভিসে। ডাকবিভাগের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রে কয়েক গুণ বেশি ব্যয় হচ্ছে গ্রাহকদের এ সেবা পেতে। তার পরও থাকছে নানা ঝুঁকি। গুরুত্বপূর্ণ নথি, চিঠি ও মালামাল হারিয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণে ক্ষতিপূরণ পান না কেউ। অনেকেই অভিযোগ করছেন, ঠিক সময়ে ডাক না পেঁৗছানোর। আছে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার বিড়ম্বনাও।
বাংলাদেশ কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (সিএসএবি)র তালিকাভুকক্ত ৪২টি দেশি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উদ্যোগে দেশে ডাক ও পণ্য পরিবহন সেবা দিয়ে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শাখা ছাড়া অন্য সব শাখার অফিস ব্যবস্থাপনা খুব একটা ভালো নয়। প্রতিটি জেলা শহরের সদর থানার মার্কেটে ছোট আকারের দোকানে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেন, কুরিয়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা। স্বল্পপরিসরে খুবই অব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে এ কুরিয়ার সার্ভিসগুলো। ২৮ বছর আগে চালু হওয়া প্রথম দিকের অনেক প্রতিষ্ঠানই আর আগের মতো ব্যবসা করতে পারছে না।
সিএসএবির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুসা রেজা কালের কণ্ঠকে জানান, দেশের অগ্রবর্তী কুরিয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সুন্দরবন, পাইওনিয়র, ড্রিমল্যান্ড, কন্টিনেন্টাল ও এসএ পরিবহন লি. শুরু থেকে বেশ ভালো সেবা দিয়ে আসছে। প্রথমদিকে সেবার মান কিছুটা ভালো হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত সবার কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একটু বেশি খরচ হলেও দ্রুত প্রাপ্তির নিশ্চয়তায় পণ্য ও অর্থ প্রেরণের জন্য অধিকাংশ লোকই এসব প্রতিষ্ঠানে ভিড় করে।
শহরের অধিকাংশ ছাত্র দ্রুত টাকা পেতে এসব কুরিয়ার সার্ভিসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শহরে কর্মরত স্বল্পআয়ের অনেক শ্রমজীবী মানুষ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রামের স্বজনদের কাছে টাকা পাঠাতে বেশ সচ্ছন্দ বোধ করে। যখন এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কদর বাড়তে শুরু করল, ঠিক তখনই এসব কুরিয়ার সার্ভিসের সেবার মান বেশ কমতে শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে খোদ এর সেবা গ্রহিতারা। প্রথম সারির কয়েকটি কুরিয়ার সার্ভিসের বিভিন্ন শাখায় সরেজমিন ঘুরে এসব অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেড
কুরিয়ার সার্ভিসের অভিযোগ কেন্দ্রে ঘর্মাক্ত অবস্থায় ছুটে এসেছিলেন একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মচারী রস্তম আলী। মে মাসের ২৯ তারিখে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মিরপুরের একটি ঠিকানায় পাঠিয়েছিলেন তিনি। ১৭ দিন পার হয়ে গেলেও নথি প্রাপকের কাছে না পেঁৗছলে তিনি মতিঝিলে অবস্থিত সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সার্ভিসের প্রধান শাখায় নিজেই এসেছিলেন খোঁজ নিতে। এসে জানতে পারলেন, নথির কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এখন তাকে প্রায় নিয়মিতই যেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ওই কুরিয়ার সার্ভিসের শাখায়।
অভিযোগ কেন্দ্রের কর্তব্যরত কর্মকর্তারা এক দিনের মধ্যে নথি ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে পরের দিন ওই অফিসে আবার যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন বলে রস্তম আলী জানান। গত ১৫ জুন দুপুরে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেডের প্রধান শাখায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির অভিযোগ কেন্দ্রে আটজন লোক বসে আসেন। তাঁদের কারো অভিযোগ নথি প্রাপকের হাতে পেঁৗছেনি, আবার কেউ পার্সেল পাচ্ছেন না। এক ঘণ্টা অভিযোগ কেন্দ্রে বসে দেখা যায় প্রায় ১৫ গ্রাহক অভিযোগ দাখিল করেছেন। ফোনে আরো ১০ থেকে ১২ গ্রাহককে অভিযোগ দিতে শোনা যায়।
এ ধরনের একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের ছাত্র তোফায়েল আহমেদ। সম্মান পাসের পর একটি ব্যাংকে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। আবেদনপত্রে গ্রামের ঠিকানা উল্লেখ থাকায় ইন্টারভিউ কার্ডটি তাঁর গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। তাঁর বাবা গত ১২ জুন টাঙ্গাইলে অবস্থিত সুন্দরবন কুরিয়ারের একটি শাখা থেকে তোফায়েলে আহমেদের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ঠিকানায় কার্ডটি কুরিয়ারে পাঠান; কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্ড হাতে না পেয়ে তিনি নিজেই এসেছেন সংশ্লিষ্ট ওই কুরিয়ার সার্ভিসের প্রধান শাখায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর ১৯ জুন সাক্ষাৎকারের তারিখ; কিন্তু তিনি তখনো কার্ড হাতে পাননি। এ ব্যাপারে অভিযোগ কেন্দ্রের কর্মকর্তরা তাঁকে এক দিনের মধ্যে তাঁর কার্ডটি পেঁৗছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান।
এমনি আরো অভিযোগ নিয়ে আসেন ইউনিটুলসের এক কর্মচারী। দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রেখে অভিযোগ কেন্দ্র থেকে তাঁকে জানানো হয় যশোরের ডাক সেদিন দেরিতে এসেছে। তাই তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে। এভাবে আরো অনেককেই অপেক্ষা করতে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট ওই কুরিয়ার সার্ভিসের প্রধান শাখায়।
এ ব্যাপারে ওই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা সবাই মিটিংয়ে আছেন বলে দায়িত্বরত অফিস পিয়ন জানায়। পরবর্তী সময়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেডের প্রশাসন বিভাগের সহকারী সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, এই সেবা কেন্দ্রটি পরিচালনার সঙ্গে ১০ হাজারের বেশি লোক নিয়োজিত। সারা দেশে পাঁচ শতাধিক বুথ থেকে গ্রাহককে এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। এত বড় একটি প্রতিষ্ঠানে কিছু অভিযোগ তো আসতেই পারে। তবে নিজেদের দোষ স্বীকার না করে গ্রাহকদের দায়ী করে বলেন, 'অধিকাংশ সময়ে গ্রাহকের ভুলের কারণে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।'
কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিস
নথি পাঠানোর কথা ছিল ঢাকার জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে; কিন্তু চলে গেছে চট্টগ্রামে। গুরুত্বপূর্ণ নথি ঠিক সময়ে না পেঁৗছায় এখন বিপাকে আছেন জনতা ব্যাংকের কল্যাণ বিভাগের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুস আকন্দ (রসিদ নম্বর-১২৯০৪৪)। নথিটি শুধু চট্টগ্রামে চলে যায়নি, সেটি ফেরত পেতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই কর্মকর্তা।
সরেজমিনে ১ জুন বেলা ২টার দিকে রাজধানীর আরামবাগে অবস্থিত কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়ের অভিযোগকারীদের ভিড় দেখা যায়। এক ঘণ্টা ওই অভিযোগ কেন্দ্রে বসে থেকে দেখা যায়, পাঁচ গ্রাহক অভিযোগ নিয়ে আসেন। সবারই অভিযোগ নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার অনেক পরও ডকুমেন্ট তাঁদের হাতে পেঁৗছেনি। এর মধ্যে একজনের নাম মো. মহসীন আলী। তিনি সবুজবাগ থানার বাসাবোর উত্তর মুগদা ঝিলপাড়ের কন্টিনেন্টালের একটি শাখা থেকে গত ১৬ মে যশোরের উদ্দেশে দরকারি কিছু নথি কুরিয়ারে পাঠান; কিন্তু কুরিয়ার সার্ভিসের ভুলে প্রেরকের কাছেই আবার ফেরত আসে। পরবর্তী সময়ে মহসীন আলী (নথির রসিদ নম্বর ৪১৯১৩৭) ১৮ মে আবার প্রাপকের উদ্দেশে মুগদা মদিনাবাগ অফিস থেকে পুনরায় ডকুমেন্টটি কুরিয়ার করেন। ২৯ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রাপক অবশেষে যশোর থেকে মহসীন আলীর কাছে ফোন করলে তিনি কন্টিনেন্টালের প্রধান কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন; কিন্তু তারা বিষয়টি সমাধানের জন্য পরে আসতে বলে। পরের দিনও সেই ডকুমেন্টটি প্রাপকের কাছে না পেঁৗছলে তিনি অভিযোগ কেন্দ্রে এসে লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করে এর প্রতিকার দাবি করেন।
এ বিষয়ে কন্টিনেন্টালের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের ইনচার্জ মো. জাকির হোসেন ভুল স্বীকার করে বলেন, এটা কিভাবে হলো, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে এক দিনের মধ্যেই এই ডকুমেন্টটি প্রাপককে আনিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এসএ পরিবহন লিমিটেড
শহরের যে পরিমাণ মানুষ এই সেবার ওপর নির্ভরশীল সে অনুযায়ী প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না কুরিয়ার সার্ভিস। এমনই অভিযোগ পাওয়া যায় এই এসএ পরিবহনের দুটি শাখায় গিয়ে। টাকা তুলতে এসে দীর্ঘক্ষণ বেশ লম্বা লাইন দেখা যায় গ্রাহকদের। এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলছেন অনেকই। ঢাকার এ্যালিফেন্ট রোডের এসএ পরিবহন লিমিটেডের একটি শাখায় টাকা তুলতে এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা কলেজের ছাত্র নাজমুস সাদাত। পড়া- লেখার খরচ বাবদ গ্রাম থেকে তাঁর বাবা প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান এই কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। টাকা তুলতে এসে প্রতিবারই এ-রকমভাবে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন বলে জানান তিনি। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখানে যে পরিমাণ গ্রাহক সেবা নিতে আসে, সে পরিমাণ সেবা দিতে প্রস্তুত ও ইচ্ছুক নয় প্রতিষ্ঠানটি।'
কাকরাইলে অবস্থিত এসএ পরিবহনের প্রধান শাখায় গিয়ে দেখা গেল সেখানেও প্রচণ্ড ভিড়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো পার্সেল এই শাখা থেকেই গ্রাহকদের কাছে পেঁৗছে দেওয়া হয়। সারা দেশ থেকে আসা এই পার্সেলগুলো এখানে এনে স্তূপ করে রাখা হয় একটি জায়গায়। গাদাগাদি করে রাখার কারণে অনেক সময় হালকা পার্সেলগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
গত ৩১ মে দুপুরে এই শাখা থেকে পার্সেল ছাড় করাতে এসেছিলেন আলমগীর হোসেন নামে এক চাকরিজীবী। তিনি জানান, দিনাজপুর থেকে পাঠানো লিচুর একটি ঝুড়ি হাতে পাওয়ার পর দেখতে পান ঝুড়ির ওপরের কিছু অংশ খোলা। সেখানে কিছু লিচু নেই বলে তাঁর ধারণা। খোয়া যাওয়া লিচুর পরিমাণ খুবই কম বলে তিনি অভিযোগ করতে চান না বলে কালের কণ্ঠকে জানান।
দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে এমন আরেক গ্রাহক শরিফুল ইসলাম জানালেন, তাঁর পার্সেলটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য ওই শাখার তিন-চারজন কর্মকর্তার কাছে গেলে তাঁরা তাঁকে কিছুক্ষণের কথা বলে প্রায় দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এব ্যাপারে এসএ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুস সালাম বলেন, 'এই সেবা প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকে সরাসরি সেবা দিয়ে থাকে। নিজেদের পরিবহনে করে সারা দেশ থেকে পার্সেল এনে গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এত ভালো সেবা আমরাই দিচ্ছি।' তবে তিনি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা স্বীকার করে বলেন, 'আমরা সেবার মান ভালো করার চেষ্টা করছি।'
দেশের কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলা মোবাইল ফোন নম্বরের ভিত্তিতে অর্থ ও পণ্য হস্তান্তর করে থাকে। প্রথমদিকে মোবাইল ফোন নম্বরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গ্রাহককে প্রতিষ্ঠানের একটি নির্দিষ্ট নম্বরে কল করতে হতো। তখন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গ্রাহক শনাক্ত করে অর্থ বা পণ্য হস্তান্তর করত কুরিয়ার সার্ভিসগুলো। গত বছর থেকে নম্বর সত্যায়নের জন্য এই নিয়ম বদলে কল রিসিভ করে কেটে দেওয়ার নিয়ম করা হয়েছে। এর জন্য বাড়তি ফোনকলের টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে গ্রাহককে। এসএ পরিবহনের প্রধান শাখায় প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার গ্রাহক সেবা নিতে আসেন। নতুন এই নিয়মের কারণে একটি শাখায়ই এই দুই হাজার গ্রাহককে ফোনকল বাবদ দুই থেকে তিন হাজার টাকা মোবাইল অপারেটর কম্পানিকে দিতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিএসএবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এই নিয়ম অনুসরণ করছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো। তবে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কম বয়সী শিক্ষার্থীসহ অনেক গ্রাহক আছে, যারা এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদান করে থাকে। তাদের সবার পরিচয়পত্র নেই। এ কারণে এখনো পরিচয়পত্রের বিষয়টি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান এসএ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম।
অনেক দেশেই খোয়া যাওয়া পণ্য বা অর্থের সমপরিমাণ জরিমানার বিধান রয়েছে। ডিএচএল, ফিডেঙ্সহ আন্তর্জাতিকমানের কুরিয়ার সার্ভিস কম্পানিগুলো সুনাম রক্ষায় গ্রাহদের বীমাকৃত অর্থ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো নিয়ম নেই। এ ব্যাপারে সিএসএবির সভাপতি ও রেইনবো কুরিয়ার সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান তানভিরুল হক বলেন, 'আমাদের দেশে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনো বিধান নেই'। তবে প্রতিষ্ঠানের সুনাম বজায় রাখতে দেশের কুরিয়ার সার্ভিস কম্পানিগুলো গ্রাহকের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এ সমস্যার সুরাহা করে আসছে বলে তিনি দাবি করেন।
 Source: http://www.kalerkantho.com 
২৬ জুন ২০১১