Sunday, June 24, 2012

যানযট থেকে মুক্তি এবং সড়ক দূর্ঘটনা থেকে বাঁচার উপায় আনুসাঙ্গিক প্রসঙ্গ

যানযট থেকে মুক্তি এবং 

সড়ক দূর্ঘটনা থেকে বাঁচার উপায় আনুসাঙ্গিক প্রসঙ্গ

- বাবুল হোসাইন

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

যানযট থেকে মুক্তির উপায়:
১. আইনের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আইন আমাদেরকে সমানভাবে মানতে হবে।
২. আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে এবং আইন সবারজন্য সমান থাকতে হবে।
৩. আইন অমান্যকারীর শাস্তি ও জারমানা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও বাস্তবসম্মত আইন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৫. ড্রাইভারদের ধৈয্য থাকতে হবে। আগে যাব আগে যাব চলার মন মানসিকতা ছাড়তে হবে। আপনি চলাচল করুন ও অন্য গাড়ী চলাচল করার সুযোগ দিন ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন।
৬. ট্রাফিক সার্জেন্ট নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা।
৭. রাস্তার পাশে পার্কিং করা যাবে না।
৮. বড় মার্কেট, মাল্টিস্টোরেট বির্ল্ডিংগুলোর যাথেষ্ট পার্কিং স্পেস গড়ে তুলতে হবে।
৯. আইন সবার জন্য সমান থাকতে হবে।
১০. আইন না মানলে তাকে জরিমানা ও জেল দিতে হবে।
১১. ঢাকার ভিতরে পূর্ব ও পশ্চিমে রাস্তা বাড়াতে হবে বা লিংক রোড বাড়াতে হবে।
১২. আন্ডারপাস ও ফ্লাইওভার গড়ে তুলতে হবে।
১৩. রাস্তার কোথাও সিটি কর্পোরেশনের ময়লার কন্টেইনার রাখা যাবে না।
১৪. মেইন রাস্তার পাশে স্কুল কলেজ গড়ে তোলা যাবে না।
১৫. আবাসিক এলাকায় ব্যস্ত অফিস গড়ে তোলা যাবে না।
১৬. রাস্তার পাশে নির্মাণ সামগ্রী রাখা যাবে না।
১৭. রাস্তার সংস্কার কাজ ও মার্কিং করে রাস্তা সুন্দর রাখতে হবে।
১৮. রাস্তার সিগনাল বাতির জন্য স্বনির্ভর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
১৯. ফুটপাথ দখলমুক্ত করা করতে হবে।
২০. বামপাশের লেন বন্ধ করা যাবে না, বন্ধ করলে জরিমানা ও শাস্তি পেতে হবে।
২১. রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় লুকিং গ্লাস, পিছনে ব্রেক লাইট ইন্ডিকেটর লাইট, ও গাড়ির নাম্বার প্লেট স্পষ্ট থাকতে হবে। গাড়িতে এড দেয়া চলবে না।
২২. বাস নির্ধারিত স্টপেজে থামবে ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছেড়ে যাবে। বাম পাশ ঘেষে যাত্রী উঠানামা করতে হবে।
২৩. সাধারণ জনগণ ফুটপাথ, ফুট ওভারব্রীজ, জেব্রা ক্রসিং, আন্ডারপাস ব্যবহার করুন।
২৪. সি.এন.জি ষ্টেশনগুলোর দ্রুত সার্ভিস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
ক. গ্যাসের চাপ যাতে কম না থাকে।
খ. পাঁচ ঘন্টা বন্ধ থাকার আইন শিথিল করা।
২৫. ঢাকার শহরতলী বা উপশহরস্থাপন করে শিল্পস্থাপনা, গার্মেন্টস শিল্প স্থানান্তর করা।
২৬. ঢাকা শহরের বাহিরে রেল নিয়ে যাওয়া। অথবা আন্ডারপাস বা ফ্লাইওভার স্থাপন করা যাতে বাস লাইন সরা সরি ক্রস না কারে।
 

সড়ক দূর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য
সবার প্রতি পরামর্শ :
১. ড্রাইভার ভাইদের ধৈর্য্য থাকতে হবে।
২. ড্রাইভারদের অত্যধিক আত্মবিশ্বাস কমাতে হবে।
৩. আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন।
৪. নেশা জাতিয় দ্রব্য ব্যবহার করবেন না।
৫. আগে যাব আগে যাব চলার মন মানসিকতা ছাড়তে হবে।
৬. চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করবেন না ও চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালাবেন না।
৭. অস্থির মন নিয়ে গাড়ি চলাবেন না।
৮. একটানা ৫/৬ ঘন্টা গাড়ী চালনার পর বিশ্রাম নিন।
৯. আন্তজেলা গাড়ী চালনার সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব পার হওয়ার পরপর বিশ্রাম নিন।
১০. গাড়ী চালনাকালে সময়ের চাইতে জীবনের মূল্য দিন।
১১. রোড আঁকাবাঁকা ও ভাঙ্গাচোরা ও রোড সাইন দেখে গাড়ি ড্রাইভ করুন।
১২. সাধারণের গাড়ি চালানোর সময় মাথা ঠান্ডা করে গাড়ি চালান।
১৩. গাড়ী ওভার টেকিং করার সময় খুব সতর্কতার সাথে ওভারটেকিং করুন।
১৪. গাড়ি রাস্তায় চালনোর পূর্বে আপনার গাড়ির ফিটনেস দেখে নিন। যেমন- ব্রেক, টায়ার এবং টায়ারের হাওয়া, ইঞ্জিনের মবিল, পানি, ব্রেক অয়েল, গিয়ার, অয়েল ভাল করে পরীক্ষা করে নিন।
১৫. রাস্তায় গাড়ি চানানোর সময় আপনার গাড়ির লুকিং গ্লাস, হেড লাইট, ব্রেক লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট চেক করে নিবেন। আপনার লাইসেন্স, গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজ সাথে নিন।
১৬. রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় রাস্তার সিগনাল বাতি, জরুরী প্রতিক, সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ গতিসীমা মেনে গাড়ি চালাবেন।
১৭. রাস্তায় কম্পিটিশন করে গড়ি চালাবেন না।
১৮. আপনি চলাচল করুন ও অন্য গাড়ী চলাচল করার সুযোগ দিন ।
১৯. বামপাশ ঘেষে যাত্রী উঠানামা করানোর সময় ইন্ডিকেটর বাতি ব্যবহার করুন।
২০. জেব্রা ক্রসিং এর পাশে সাধারণ যাতায়তের জন্য গাড়ী থামিয়ে রাস্তা পারাপরের সুযোগ দিন।
২১. প্রতি দুই থেকে তিন মাস পর পর ভাল কোন ওয়ার্কশপে আপনার গাড়ী পরীক্ষা করিয়ে নিন।


গাড়ীর মালিকদের প্রতি পরামর্শ

১. গাড়ীর মালিক হওয়ার সাথে সাথে রাস্তায় চলাচলের নিয়ম কানুন ভালভাবে জেনে নিন।
২. আপনার ড্রাইভারদেরকে কত ঘন্টা কাজ করাচ্ছেন তা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করুন।
৩. আপনার ড্রাইভারদেরকে কত বেতন দিচ্ছেন এবং উৎসব ভাতা দিচ্ছেন কিনা?
৪. ওভারটাইম ভাতা দিন। সেই সাথে সাপ্তাহিক ছুটি দিন।
৫. আপনার ড্রাইভারের প্রায়োজনের দিকে নজর রাখুন।
৬. ড্রাইভরদের প্রতি সদব্যবহার করুন ও তাদেরকে প্রাপ্য সম্মান দিন।
৭. আপনার ড্রাইভার রাস্তার নিয়ম কানুন সঠিক ভাবে মানছে কিনা খেয়াল করুন। তার বাজে নেশা আছে কি না সে বিষয়ে নজর রাখুন।
৮. আপনার গাড়ী তিন মাস পরপর বি.আর.টি .এ বা উন্নতমানের ওয়ার্কশপে গাড়ী চেকআপ করাবেন।


রাস্তায় দূর্ঘটনা কেন ও কি কারণে হয়?
১. ড্রাইভারদের ধৈর্য্য না থাকা।
২. ড্রাইভারদের আত্মবিশ্বাস বেশী রকমের থাকা।
৩. রাস্তার স্পিড ব্রেকারের উপর রং না থাকা।
৪. নেশাগ্রস্থ অবস্থায়, চোখে ঘুম, শারীরিক অসুস্থতা, প্রচন্ড টেনশন নিয়ে গাড়ি চালানো।
৫. একটানা ৫/৬ ঘন্টার বেশী গাড়ী চালানো।
৬. আন্তজেলা গাড়ি চালনার সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর বিরতি না দেওয়া তথা ড্রাইভার এর রেষ্ট না হওয়া।
৭. আন্তজেলা গাড়ি চালনার সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর বিরতির সময় গাড়ির চাকা, পানি ও সাধারণ চেকআপ না দেওয়া।
৮. গাড়ি চালনার সময় একথা ভুলে যাওয়া যে “সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশী”।
৯. গাড়ীর মালিককে ভাবতে হবে- ড্রাইভার ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া ও পর্যাপ্ত রেষ্ট নিয়েছে কিনা?
১০. গাড়ীর চলন্ত অবস্থায় গাড়ির স্পিড কত কিলো বেগে চলছে তা খেয়াল না করা।
১১. গাড়ীর মালিক ড্রাইভারকে কত ঘন্টা কাজ করাচ্ছেন?
১২. ড্রাইভারকে জানতে হবে গাড়ী চলন্ত অবস্থায় ধুমপান ও মোবাইলে কথা বলা নিষেধ।
১৩. গাড়ীর মালিক তার গাড়ি উন্নতমানের গেরেজ বা বি.আর.টি কর্তৃক পরীক্ষা করিয়ে নিয়েছে কি না?
১৪. গাড়ীর কাগজপত্র ঠিক করার সময় বি.আর.টি কর্তৃপক্ষ গাড়ী পরীক্ষা না করা বা চেকআপ না করা।
১৫. রোড সাইন রোড সিগনাল বাতি, জরুরী প্রতীক, রোডের গতিসীমা, না মেনে অথবা না জেনে গাড়ি চালানো।
১৬. রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় টায়ার, টায়ারের হাওয়া, লুকিং গ্লাস, হেড লাইট, পিছনের ব্রেক লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট, ব্রেক অয়েল, গিয়ার অয়েল, ইঞ্জিন মবিল ও পানি না থাকা বা ব্যবহার না করা।
১৭. রোড আকাবাকা বা রাস্তার ভাঙাচোরা না দেখে গাড়ি চালানো।
১৮. রাস্তায় সাধারণ লোকজন জেব্রাক্রসিং বা ওভারব্রীজ ব্যবহার না করা।
১৯. বাম পাশে ওভারটেকিং করা ও বামপাশ ঘেষে যাত্রি উঠানামা না কারা।
২০. আমরা সাধারণ গাড়ীর যাত্রি চলন্ত অবস্থায় গাড়িতে উঠা।
২১. ষ্টপিজ ছাড়া গাড়ি থামানো ও গাড়ির যাত্রি উঠানামা করা।

রাস্তায় যানজটের কারণ :
১. ড্রাইভারদের ধৈর্য্য না থাকা, লাইন বিহীন বা লাইন ছাড়া গাড়ী চালানো,
২. আইন সবার জন্য সমান নয় বা আমরা সকলে সমানভাবে মানি না।
৩. ট্রাফিক পুলিশ এর অবহেলা ও সেই সাথে সাধারণ জ্ঞান না থাকা ও নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করা।
৪. রাস্তায় সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ডিপো থাকা ও রাস্তার পাশে নির্মান সামগ্রী রাখা।
৫. রাস্তা ভাঙা চোরা থাকা ও বামপাশের রাস্তা বন্ধ করে রাখা।
৬. রাস্তার পাশে প্রয়োজনীয় জরুরী প্রতীক না থাকা ও রাস্তায় রোডমার্ক সুন্দর পরিষ্কার না থাকা।
৭. রাস্তায় সিগনাল বাতি না থাকা অথবা নষ্ট থাকা ও বিকল্প হিসাবে সৌর বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা না থাকা।
৮. বহুতল বিল্ডিং এর নিজস্ব পার্কিংস্পেস না থাকায় যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং করে রাখা।
৯. ব্যাস্ত রাস্তার পাশে স্কুল কলেজ থাকা।
১০. কাউন্টার বাস এলোপাথারী থামানো ও অনর্থক বিলম্ব করা ।
১১. বাসের জন্য অপেক্ষমান যাত্রিগণ রাস্তার ওপর দায়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করা।
১২. স্বল্প সময়ের জন্য আইনের কড়াকড়ি ও বেশীরভাগ সময়ে আইনের শিথিলতা বিরাজমান থাকা।
১৩. গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপার কর্তৃক যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রি উঠানামা করানো।
১৪. রাজপথে ট্রেনিং বিহীন, ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন ও গন্ডমূর্খ রিক্সাওয়ালাদের নূনতম জ্ঞানশুন্য রিক্সা চালানো।
১৫. গলির মাথায় এলোপাথারী রিক্সার জট, উল্টোপথে যাতায়াত, লাইন বিহীন রিক্সা চালানো।
১৬. ফুটপাথ হকারদের দখলে থাকা এবং রাস্তার উভয় সাইডের ৪০% দোকানদার ও ময়লা আবর্র্জনার দখলে থাকা।
১৭. রাস্তায় সাধারণ লোকজন জেব্রাক্রসিং বা ওভারব্রীজ ব্যবহার না করা।
১৮. সি.এন.জি ফিলিং ষ্টেশনের পাশে গাড়ীর লম্বা লাইন থাকা।
১৯. গাড়ী রাস্তায় চালানোর সময় লোকিং গ্লাস, পিছনে ব্রেক লাইট ও ইন্ডিকেটর লাইট না থাকা বা ব্যবহার না করা।

আমি আশা করি এই কথাগুলো কৃর্তপক্ষ নজরে দিবেন।

সতর্কবাণী
সাবধানে ড্রাইভ করি। সাবধানে রাস্তা পার হই।সাবধানে গাড়িতে উঠি, ফুটপাথ ও ওভারব্রীজ দিয়ে চলাচল করি। আইনকে শ্রদ্ধা করি। দৌড় দিয়ে রাস্তা পার না হই।
 

Source: http://www.somewhereinblog.net

No comments:

Post a Comment